নুরুল আমিন হেলালী :: সামুদ্রিক শৈবাল স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি জলজ উদ্ভিদ। যা সুনীল অর্থনীতিতে অসামান্য অবদান রাখতে সক্ষম। সামুদ্রিক শৈবাল নিরাপাদ খাদ্যের অনন্য উৎস। সামুদ্রিক শৈবাল সমুদ্রের মুল্যবান সম্পদ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে বর্তমান সরকার কৃষিতেও অভুতপুর্ণ উন্নয়ন সাধন করে এখন আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। সামুদ্রিক শৈবাল একসময় শুধুমাত্র রাখাইনরা খাদ্য হিসেবে নিলেও এখন তা দিয়ে বিভিন্ন খাদ্য, কসমেটিকস ও ওষুধ তৈরি হচ্ছে। সামুদ্রিক শৈবাল এখন সাগর থেকে সংগ্রহের পাশাপাশি কক্সবাজার, সুন্দরবন ও পটুয়াখালির উপকূলীয় এলাকায় চাষ করা হচ্ছে।
প্রায় চারশত জন কৃষক বিভিন্নভাবে এর চাষ, উৎপাদন ও বাজারজাত করণের সাথে জড়িত। সামুদ্রিক শৈবালে প্রচুর পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাদ্য প্রাণ রয়েছে। কৃষক- কৃষাণীরা এদেশের সম্পদ। এর সাথে যারা জড়িত তারা আর্থিকভাবেও লাভবান হচ্ছে।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে কক্সবাজারে এক অভিজাত হোটেলে স্টকহোল্ডার কর্মশালায় বক্তারা উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
২৭ ডিসেম্বর (শনিবার) বিএআরআই এর মহাপরিচালক ড.দেবাশীষ সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্টিত কর্মশালায়
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিএআরসি এর নির্বাহী চেয়ারম্যান ড.শেখ মুহাম্মাদ বকতিয়ার, সম্মনিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেজিএফ এর নির্বাহী পরিচালক ড.জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএআরআই পরিচালাক ড.মো.শামসুল আলম, বিএআরসি পরিচালক সদস্য ড.মো.আব্দুস সালাম, কেজিএফ পরিচালক ড.মো.আক্কাস আলি, ড.মো.এখলাস উদ্দিন (ডিডি, ডিএই কক্সবাজার) প্রমূখ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ড.মো.শহিদুজ্জামান, প্রকল্পের বিষয়বস্তু ও অগ্রগতি সম্পর্কে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড.মো.ফারুক হোসেন, ড.মোশাররফ হোসাইন মোল্লা, প্রফেসর ড.এস এম রফিক উজ্জামান।
অনুষ্ঠানে বক্তারা আরও বলেন, সামুদ্রিক শৈবাল এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বানিজ্যিক ভাবে চাষ করা হয় এবং উত্তম খাবার হিসেবে প্রতিদিন গ্রহন করা হয়।
বাংলাদেশের সমুদ্র উপকুলে বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক শৈবাল পাওয়া যায়, যাদের মধ্যে ৬-৮ প্রজাতি বানিজ্যিক ভাবে চাষে করা সম্ভব।
বর্তমানে লাল সামুদ্রিক শৈবাল বা সমুদ্র সেমাই বানিজ্যিক ভাবে চাষ করা হচ্ছে। প্রধান অতিথি আরো বলেন সামুদ্রিক শৈবাল সমুদ্রের এক মূল্যবান সম্পদ, যা বিভিন্ন ভাবে খাদ্য হিসেবে প্রতিদিন ব্যবহার হতে পারে। যা থেকে বিভিন্ন ধরণের ঔষধ, প্রসাধনি সামগ্রি, সার, বায়োফুয়েল সহ অরো অনেক কিছু তৈরি করা যায়।
সামুদ্রিক শৈবাল সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি উদ্ভিদ, যা সমুদ্রে প্রাথমিক উৎপাদনশীলতা তৈরিতে সাহায্য করে এবং সমুদ্রের প্রানীর আবাসস্থল হিসেবে কাজ করে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত চাষি, উদ্যোক্তা ও সাংবাদিক উন্মুক্ত আলোচনায় নিজেদের মতামত ব্যক্ত করেন । চাষি ও উদ্যোক্তারা সামুদ্রিক শৈবাল দিয়ে উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী বাজারজাত করণ ও নতুন নতুন বাজার সৃষ্টির জন্য সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা কামনা করেন। অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্বাবধানের দ্বায়িত্ব পালন করেন উর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মুহাম্মদ শরফুদ্দিন ভুঁইয়া। কর্মশালা সঞ্চালনা করেন ড.অপুর্ব কুমার চাকি।
উক্ত অনুষ্ঠানে চাষি, উদ্যোক্তা, সাংবাদিক, কৃষিবিদ ও সংশ্লিষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পাঠকের মতামত: